Table of Contents
পনিরের কী কী গুণ আছে জানেন?
কটেজ চিজ বা পনির ছাড়া ইন্ডিয়ান থালি ভাবাই যায় না। পনির দিয়ে যেমন বানানো যায় সুস্বাদু সব ডিস, তেমনি পনিরের কিন্তু অনেক গুণও রয়েছে। কেন খাবেন পনির? জানতে চোখ রাখুন গ্যালারির পাতায়।
পনিরে রয়েছে প্রোটিন: ডায়েটিশিয়ানেরা জানাচ্ছেন, প্রোটিনে রয়েছে ভরপুর প্রোটিন। ১০০ গ্রাম পনিরের মধ্যে থাকে ১১ গ্রাম প্রোটিন। তা ছাড়া, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ পনির আমিষ খাবারের বিকল্প হিসেবে বহু দিন ধরেই জায়গায় করে নিয়েছে ডায়েট চার্টে।
হাড় এবং দাঁত মজবুত করে পনির: নিয়মিত পনির খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়। দাঁত এবং হাড়ের গঠন মজবুত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে দৈনন্দিন চাহিদার ৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম পনির থেকেই পূরণ হতে পারে।
নিয়ন্ত্রণে থাকে সুগার: পনিরের মধ্যে প্রোটিন জাতীয় উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তা ছাড়া, ম্যাগনেসিয়াম হার্ট ভাল রাখে। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
হার্টের সুরক্ষায়: পনিরের মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম যা শরীরে রক্তরসের ভারসাম্য বজায় রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পনিরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে যা হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি: শরীরে হজম শক্তি বাড়ায় কটেজ চিজ বা পনির। পনিরের মধ্যে থাকে ফসফরাস যা পরিপাকে সাহায্য করে। তা ছাড়া, এর ম্যাগনেসিয়ামজাত উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী: পনিরে থাকে ফোলেট, যা ভ্রুণের বিকাশে সাহায্য করে। ফোলেট এক ধরণের বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন যা রক্তে লোহিত কণিকা উৎপাদনেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
ওজন কমায় পনির: প্রোটিন সমৃদ্ধ পনির অনেক ক্ষণ খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সংযুক্ত লিনোলেয়িক অ্যাসিড (ফ্যাটি অ্যাসিড) চর্বি গলিয়ে দেহের অতিরিক্ত মেদ ঝরায় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
পনির কিভাবে খায়?
আমরা অনেকেই পনির খেতে পছন্দ করি। পনির খাওয়ার কোন নির্ধারিত নিয়ম নেই কিন্তু, বিভিন্ন দেশে পনির খাওয়ার ধরন ভিন্ন। আমাদের দেশে আমরা মূলত পনির স্যান্ডউইচ, এবং পিজ্জায় পনির ব্যবহার করি। আপনার তৈরি করা পনির দিয়ে আপনি অনেক ধরনের খাবার বানাতে পারবেন বা আমাদের ঢাকাইয়া পনির দেখুন।
পনির খাওয়ার কিছু উপায়
- Cheese sandwich: ২ পিস ব্রেড এবং ভিতরে পনির দিয়ে স্যান্ডউইচ তৈরি করে খেতে পারবেন।
- Only cheese: কোন কিছু ছাড়া শুধু শুধু পনির খেতে পারবেন।
- Salt crackers and cheese: সল্টি বিস্কিট দিয়ে পনির খেতে পারবেন।
- Grapes and cheese: আপনি আঙ্গুর দিয়ে পনির খেতে পারবেন।
- Making pizza and pasta with cheese: চিজ দিয়ে আপনি পিজ্জা ও পাস্তা তৈরি করে খেতে পারবেন।
- Burger with cheese: আপনি আপনার বার্গারের ভিতরে চিজ দিয়ে খেতে পারবেন।
- Baked cheese bread: ব্রেড এর ওপর পনির রেখে আপনি ওভেনে বেক করে খেতে পারবেন।
- Mozzarella sticks: পনির ছোট ছোট করে কেটে ভেজে খেতে পারবেন।
এই সব ধরনের খাবার আপনি পনির দিয়ে তৈরি করতে পারবেন। এখানে, বেশিরভাগ খাবারের জন্য প্রয়োজন হয় শুধুমাত্র ব্রেড এবং পনিরের। আপনি ব্রেড এর সাথে পনির দিয়ে স্যান্ডউইচ তৈরি করে খেতে পারবেন, অথবা ব্রেড আর পনির ওভেনে দিয়ে বেক করে খেতে পারেন।
আপনি পনির ছোট ছোট সাইজে কেটে ব্রীডিং করে ফ্রাই করে খেতে পারেন। আপনি পনির দিয়ে সস বানিয়ে খেতে পারেন। সুতরাং বলা চলে আপনি যেভাবে পনির খেতে চান সেভাবেই খেতে পারবেন। আশা করি পনির কিভাবে খায়, এ নিয়ে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গিয়েছেন।
পনিরের পুষ্টিগুণ
বিভিন্ন ধরনের পনিরের বিভিন্ন পুষ্টি গুণ রয়েছে। পৃথিবীতে অনেক ধরনের পনির তৈরি করা হয় এবং তাদের সবার পুষ্টিগুণ ভিন্ন ভিন্ন।
পনিরের উপকারিতা ও অপকারিতা
পনিরের অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। দুধ দিয়ে তৈরি যেকোনো খাবারের অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফ্যাট, এবং প্রোটিন থাকে তাই দুধ দিয়ে তৈরি পনির গ্রহণ করলে আপনি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফ্যাট, এবং প্রোটিন পাবেন যা আপনার শরীরের জন্য উপকারী।
পনিরের কিছু উপকারিতা
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: প্রতিদিন ৪০ গ্রাম পনির গ্রহণ করলে আপনার হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের চান্স কমে আসবে।
দাঁত এবং হাড় শক্ত করে: পনিরের রয়েছে calcium, zinc, vitamin A এবং B12। যা আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী এবং আপনার দাঁত এবং হাড় মজবুত করতে সাহায্য করবে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়: আপনি যদি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম পনির গ্রহণ করেন তাহলে, আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৮% কমাতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যবান করে: ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন প্রায় ১ কাপ পনির খাওয়া মাংসপেশির ভর বাড়ায় এবং ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
Good cholesterol বাড়াতে সাহায্য করে: প্রতিদিন প্রায় ২০ গ্রাম পনির গ্রহণ করলে, আপনার HDL cholesterol or good cholesterol বাড়াতে সাহায্য করবে। কারণ, পনিরের রয়েছে vitamin K2, যা আপনার কোলেস্টেরল লেভেল কন্ট্রোলে রাখতে সাহায্য করবে।
পনিরের কিছু অপকারিতা
হূদরোগ: অতিরিক্ত পনির গ্রহণ করলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। আপনি যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম বা তার বেশি পনির গ্রহণ করেন তাহলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি ১০-২০% বাড়তে পারে।
ওবিসিটি: পনিরের প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট থাকে যার কারণে মানুষ অতিরিক্ত মোটা হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি অতিরিক্ত পনির গ্রহণ করেন তাহলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে এবং অনেক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কনস্টিপেশন: পনিরের অনেক ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেল, এবং ফ্যাট রয়েছে এবং এর মধ্যে যদি কোন উপাদান আপনার শরীরে সহ্য না হয় তাহলে আপনার কনস্টিপেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পনির গ্রহণের কারণে প্রায় সময়ে কনস্টিপেশনের সমস্যা হতে দেখা যায়।
উচ্চ রক্তচাপ: পনিরের প্রচুর পরিমাণে সেচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে আপনার উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং এই উচ্চ রক্তচাপ থেকে স্ট্রোক সৃষ্টি হতে পারে।
এলার্জি: পনিরের অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। পনির এসব উপাদান আপনার সহ্য নাও হতে পারে তাই প্রচুর পরিমাণে পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
পনিরের রেসিপি
এই ছিল আজকে পনির কিভাবে খায় এবং তার উপকারিতা -অপকারিতা এ নিয়ে লেখা। লিখাটি লিখেছেন সায়মা বিনতে ইকবাল।
যেখান থেকে নেওয়া হয়েছে তার সোর্স লিঙ্কঃ priyocareer.com